নাগরিক সমাজের জোট ‘সুন্দরবন পর্যবেক্ষণ দল’ বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), উপকূলীয় জীবনযাত্রা ও পরিবেশ কর্মজোট (ক্লিন), গ্রামীণ জীবনযাত্রার স্থায়িত্বশীল উন্নয়নের জন্য প্রচারাভিযান (সিএসআরএল), ইক্যুইটি এ্যান্ড জাস্টিস ওয়ার্কিং গ্রুপ বাংলাদেশ (ইক্যুইটিবিডি), ফরেস্ট পিপলস্ প্রোগ্রাম (এফপিপি) ও ম্যানগ্রোভ এ্যাকশন প্রোজেক্ট (ম্যাপ) যৌথভাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ক্লিনের প্রধান সঞ্চালক হাসান মেহেদী। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘২০০২ সালে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে তিনটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান সুন্দরবনের তেল-দূষণের সম্ভাব্য ক্ষতি বিষয়ে একটি সমীক্ষা চালায়। তেল-দূষণ থামানো না গেলে প্রথম ১৫ দিনের মধ্যে পাখি, কচ্ছপ, ছোট মাছ ও অমেরুদণ্ডী প্রাণী মারা যেতে পারে বলে ওই সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল।’ তিনি অভিযোগ করেন, ‘ওই প্রতিবেদনে তেল-দূষণ রোধ করার জন্য বন বিভাগের সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও উপকরণ ক্রয়, স্থানীয় জনগণ ও স্বেচ্ছাসেবীদের অংশগ্রহণে বাঁশ, কাঠের গুঁড়ি, কাঁচাপাট, খড়কুটো, বস্তা ও চট ব্যবহার করে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছিল। ওই প্রতিবেদনের পর এক যুগ পার হয়ে গেলেও কোনো প্রস্তুতি নেওয়া হয়নি।’
‘তেলখেকো ব্যাকটেরিয়া ছড়ানোর পদ্ধতি কার্যকর হলেও বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য সেটি খরচবহুল’ বলেও অভিমত প্রকাশ করেন বক্তারা। বক্তারা যত দ্রুত সম্ভব শত শত তরুণ স্বেচ্ছাসেবীদের দেশী উপকরণ দিয়ে তেল অপসারণের জন্য ঘটনাস্থলে নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়, ২০১১ সালের ২৪ নভেম্বর স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে নৌরুট বন্ধ করার নির্দেশ দেন। ২০১২ সালের ২১ আগস্ট পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে একই অনুরোধ জানায়। কিন্তু নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় ওই নির্দেশ ও অনুরোধের কোনো তোয়াক্কাই করেনি।
এ ধরনের দুর্ঘটনা মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও উপকরণ সংগ্রহে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সুন্দরবন পর্যবেক্ষণ দলের আহ্বায়ক গৌরাঙ্গ নন্দী, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহফুজুর রহমান মুকুল, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) খুলনা অঞ্চলের সমন্বয়কারী এ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার, জনউদ্যোগের খুলনা সমন্বয়কারী মহেন্দ্রনাথ সেন, হিউম্যানিটিওয়াচের নির্বাহী সদস্য পলাশ দাশ প্রমুখ।