top of page

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত সংস্কারে ১৬ দফা দাবি বিডাব্লিউজিইডির

Sep 12, 2024

| নিজস্ব প্রতিবেদক | কালের কণ্ঠ

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ব্যর্থ প্রকল্পসমূহ অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ ও উন্নয়ন বিষয়ক কর্মজোট (বিডাব্লিউজিইডি)। জোটের পক্ষ থেকে এই খাতের সংস্কারে স্বাধীন গণতদন্ত কমিশন গঠনসহ ১৬ দফা সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত সংস্কার, নাগরিক প্রত্যাশা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব সুপারিশ তুলে ধরা হয়। সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিডাব্লিউজিইডি’র সদস্য সচিব হাসান মেহেদি।

 

তিনি বলেন, অতীতে জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরশীলতা কমানোর কথা বলা হলেও, বাস্তবে কোনো অগ্রগতি হয়নি। গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ৪৯ শতাংশ সময় বিদ্যুৎ উৎপাদন করে, বাকি ৫১ শতাংশ সময় অকার্যকর থাকে। তবুও নতুন নতুন এলএনজি ভিত্তিক গ্যাস পাওয়ার প্ল্যান্টের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যা অগ্রহণযোগ্য। এসব ব্যর্থ প্রকল্পের অনুমোদন বন্ধ করে টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে মনোনিবেশ করতে হবে।


 বর্তমান সরকার এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।


আলোচনায় অংশ নিয়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বিগত সরকারের ভুল নীতি, দুর্নীতি, রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব ও দুর্বৃত্তায়ন বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতকে পতনের দ্বারে নিয়ে গেছে। যে খাত রাষ্ট্রের শক্তিশালী সম্পদ হওয়ার কথা ছিল, তা এখন বোঝায় পরিণত হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রতিষ্ঠানকে বামন প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছে।

বিইআরসি, স্রেডার মত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানকে ধীরে ধীরে অকার্যকর করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর শক্তি খর্ব করে বিপিডিবি ও মন্ত্রণালয়ের অধীনে নেওয়া হয়েছে। এইগুলোর পূর্বের শক্তি বা ক্ষমতা রয়েছে তা ফিরিয়ে দিতে হবে।


জ্বালানি খাতের যেকোনো চুক্তি প্রতিযোগিতামূলক করার দাবি জানিয়ে ওই জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বলেন, চুক্তিগুলো পাবলিক প্রকিউরমেন্ট এক্টে দ্রুততর সময়ে করতে হবে। সমস্ত বিভাগ ও মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম স্বচ্ছতার মাধ্যমে করতে হবে।


জ্বালানি নীতি প্রণয়নকালে অংশীজনদের সঙ্গে রাখতে হবে।


তিনি আরো বলেন, প্রচলিত ধারণা আছে বড় বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র না হলে নবায়নযোগ্য জ্বালানি করা যায় না। এই জায়গা থেকে সরে আসতে হবে। ক্ষুদ্র, মাঝারি কিংবা ছোট ছোট বিদ্যুৎ কেন্দ্রর মাধ্যমেও যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি সরবরাহ করা যায়, সেগুলোকে প্রাধিকার দিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত সুপারিশমালায় বলা হয়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। প্রাথমিক পরিবেশগত নীরিক্ষা ও পরিবেশগত সমীক্ষা প্রতিবেদন উন্মুক্ত ও বাধ্যতামূলক করতে হবে। জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে ‘নো ইলেক্ট্রিসিটি নো পে’ নীতির আওতায় আনতে হবে। অনুমোদিত ও প্রস্তাবিত নতুন এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ বাতিল করতে হবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি মহাপরিকল্পনা ও ‘শূন্য কার্বন’ নিশ্চিত করার জন্য নতুন মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে ৫০০ কোটি টাকা করতে হবে।


আরো বলা হয়, টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি কর্তৃপক্ষকে (স্রেডা) স্বতন্ত্র ডিভিশনের মর্যাদা দিতে হবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানির যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম আমদানি কর ও ভ্যাট মওকুফ করতে হবে। সহজ শর্তে ও স্বল্প বা বিনা সুদে মোট নির্মাণ-ব্যয়ের ৭০ শতাংশ পর্যন্ত দীর্ঘমেয়াদি ব্যাংকঋণ দিতে হবে। হাইব্রিড যানবাহনের আমদানি শুল্ককর ও নিবন্ধন ফি ৩০ শতাংশ কম এবং বৈদ্যুতিক যানবাহনের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ কম করতে হবে। সৌরভিত্তিক চার্জিং স্টেশন অনুমোদন করতে হবে। সৌরপ্যানেল নির্মাণ ও পুনর্নবায়নের জন্য ইনস্টিটিউট গড়ে তুলতে হবে। তরুণ উদ্যেক্তা ও কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে।


সংবাদ লিঙ্কঃ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত সংস্কারে ১৬ দফা দাবি বিডাব্লিউজিইডির

bottom of page