

[ময়মনসিংহ, ১৯ মার্চ ২০২৫]: জ্বালানি খাতের স্থিতিশীলতা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে অন্যচিত্র ফাউন্ডেশন, উপকূলীয় জীবনযাত্রা ও পরিবেশ কর্মজোট (ক্লিন) এবং বিডাব্লিউজিইডি-এর যৌথ উদ্যোগে আজ ময়মনসিংহের একটি রেস্তোরাঁয় অনুষ্ঠিত হয়েছে "বিকল্প জ্বালানি পরিকল্পনা বিষয়ক আলোচনা সভা"। আলোচনা সভায় জ্বালানি খাতের বিকল্প সম্ভাবনা, স্বল্প-মেয়াদি ও দীর্ঘ-মেয়াদি পরিকল্পনা এবং টেকসই জ্বালানি ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
বিকল্প জ্বালানি পরিকল্পনা বিষয়ক মূল প্রবন্ধ যৌথভাবে উপস্থাপন করেন ক্লিন-এর প্রধান সমন্বয়কারী জনাব মাহবুব আলম প্রিন্স এবং প্রচারাভিযান সমন্বয়কারী সাদিয়া রওশন অধরা।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় সাদিয়া রওশন বলেন- ‘দেশের বার্ষিক বিদ্যুৎ চাহিদা প্রতি বছর ৬.৫ থেকে ৮.৩ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, তবে ২০৩০ সালের মধ্যে এটি ৫ শতাংশ এবং ২০৪০ সালের মধ্যে ৪ শতাংশে-এ নেমে আসতে পারে। এই অনুসারে, বিদ্যুৎ চাহিদা ২০৩০ সালে ১২৮ টেরাওয়াট-ঘন্টা (TWh), ২০৪১ সালে ২৩১ টেরাওয়াট-ঘন্টা এবং ২০৫০ সালে ৩১৮ টেরাওয়াট-ঘন্টায় (TWh) পৌঁছাতে পারে।’
জনাব মাহবুব আলম উক্ত সভায় উল্লেখ করেন যে- ‘দেশের শিল্পখাতের ছাদ ব্যবহার করে ৫,০০০ মেগাওয়াট ছাদভিত্তিক সৌর বিদ্যুৎ স্থাপন করা সম্ভব, যা বছরে ৮,১০০ মিলিয়ন ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। একইভাবে, আবাসিক ভবনের ছাদে ২৫,০০০ মেগাওয়াট ছাদভিত্তিক সৌর বিদ্যুৎ স্থাপন করে বছরে ৪৮,৬২০ মেগাওয়াট (MW) বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। এই টেকসই ও দক্ষ জ্বালানি পরিকল্পনার কৌশলগত পরিবর্তন জীবাশ্ম জ্বালানির সম্প্রসারণকে কমিয়ে আনবে।’
তিনি আরও বলেন, ২০৩৫ সালের পর থেকে যখন বহু বিদ্যুৎকেন্দ্র অবসরে যাবে এবং দেশের উৎপাদন সক্ষমতা হ্রাস পেতে শুরু করবে, তখন আমাদের এগোনোর পথ কী হবে? সেই অনিশ্চিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি কি না, তা গভীরভাবে বিবেচনা করা প্রয়োজন।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব তাহমিনা আক্তার, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার, ময়মনসিংহ, মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম, ডিজিএম (কারিগরি), ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি, ড. মিজানুর রহমান, অধ্যাপক, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্বজিত সাহা, সহকারী প্রকৌশলী, বিপিডিবি, মো. সালাহউদ্দিন, সহযোগী অধ্যাপক, ময়মনসিংহ এগ্রিকালচার কলেজ, মাহবুব আলম প্রিন্স, অপারেশন কো-অর্ডিনেটর, ক্লিন, এবং রেবেকা সুলতানা, নির্বাহী পরিচালক, অন্যচিত্র ফাউন্ডেশন। উক্ত অনুষ্ঠানে সভা-সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন মোস্তফা মো. খায়রুল আলম তুহিন, সদস্য সচিব, ফোরাম অন ইকোলজি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, ময়মনসিংহ।
আলোচনা সভায় সম্মানিত বক্তারা বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের বিকল্প সম্ভাবনা, নবায়নযোগ্য শক্তির প্রসার এবং বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ নিয়ে মতবিনিময় করেন। তারা টেকসই ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন এবং নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান।
For Downloading the Press Release